Logo

আন্তর্জাতিক    >>   পুনরায় নিষেধাজ্ঞা জারি হলে ফলাফল উল্টো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেহরান

পুনরায় নিষেধাজ্ঞা জারি হলে ফলাফল উল্টো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেহরান

পুনরায় নিষেধাজ্ঞা জারি হলে ফলাফল উল্টো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেহরান

২০১৫ সালের ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তি পুনরুদ্ধারে নতুন করে তৎপর হয়েছে জাতিসংঘ। চুক্তিটি কার্যকর করার জন্য ইরান ও বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের রাজনৈতিক বিষয়ক প্রধান রোজমেরি ডিকার্লো। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক অধিবেশনে এই আহ্বান জানানো হয়।

ডিকার্লো বলেন, “এই চুক্তি কার্যকর হলে এটি কেবল অঞ্চলটির নয়, বরং পুরো বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে। মধ্যপ্রাচ্য আর অস্থিতিশীলতার ভেতর থাকতে পারছে না। সংলাপ এবং কূটনীতিই একমাত্র পথ।”

তবে জাতিসংঘের এই আহ্বানে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তেহরান। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাঈদ ইরাভানি জাতিসংঘের প্রস্তাবের জবাবে বলেন, “ইরানের ওপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ অবৈধ এবং ক্ষতিকর হবে। এ ধরনের পদক্ষেপ ফলপ্রসূ নয় বরং বিপরীত ফল বয়ে আনবে।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানি ভিত্তিহীন অভিযোগের মাধ্যমে ইরানকে দোষারোপ করছে। “এই অভিযোগগুলো সত্যকে বিকৃত করছে এবং নিজেদের প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থতাকে ঢাকার চেষ্টা করছে,” বলেন ইরাভানি।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন চুক্তি পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে বলেন, “তেহরানের উচিত তার পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় ফিরতে এবং অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা ছড়ানো বন্ধ করা।”

ব্লিঙ্কেন আরও বলেন, চলতি বছর ইরানের জন্য বিশেষভাবে কঠিন ছিল। ইসরাইলের হামলা এবং আঞ্চলিক উত্তেজনা তেহরানের অবস্থানকে নড়বড়ে করে তুলেছে। তবে তিনি মনে করেন, আলোচনার দরজা এখনও খোলা আছে।

২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চীনের মধ্যে পরমাণু চুক্তি (জেসিপিওএ) স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির অধীনে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। বিনিময়ে ইরান তার পরমাণু কর্মসূচির ওপর কঠোর সীমাবদ্ধতা আরোপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

তবে ২০১৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসেন। যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়ার পর ইরানও ধীরে ধীরে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করতে শুরু করে। পরমাণু সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে সীমাবদ্ধতা না মানার কারণে চুক্তিটি কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে।

চুক্তিটি পুনরুদ্ধার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ চলছে। ইরানের দাবি, নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে তাদের কোণঠাসা করার চেষ্টা হচ্ছে। অন্যদিকে, পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে একটি বড় হুমকি হিসেবে দেখছে।

জাতিসংঘের রাজনৈতিক বিষয়ক প্রধান ডিকার্লো বলেন, “চুক্তি কার্যকর না হলে মধ্যপ্রাচ্য নতুন করে সংঘাতে জড়াতে পারে। এটি এড়াতে বিশ্ব শক্তি ও ইরানকে একযোগে কাজ করতে হবে।”

ইরানের পরমাণু চুক্তি পুনরুদ্ধার শুধুমাত্র একটি আঞ্চলিক ইস্যু নয়, বরং এটি বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নিষেধাজ্ঞা ও কূটনৈতিক ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে সংকট আরও গভীর হচ্ছে।